অশান্ত পৃথিবীতে মন ভেঙ্গোনা

ভাঙ্গা মন (নভেম্বর ২০১৯)

Abdul Hannan
  • ৪৬
হে নবাগত বুদ্ধিদীপ্ত যুবক অশান্ত ধরনী দেখে মন খারাপ করোনা,মনে রেখো এটা ধরনীর একটা পাঠ। জগত সৃষ্টির পরে, সৃষ্টির উত্থান ঘটেছে,সৃষ্টি জীবরা যখনই নিজেদের স্বার্থ বুঝতে শিখেছে তখন হতেই দ্বন্দ্বের শুরু হয়, তারপর থেকেই সৃষ্ট প্রাণীগুলির মধ্যে দ্বন্দের প্রসারতার অনুপ্রবেশ ঘটে। সৃষ্টির শুরুতে এই দ্বন্দ্ব নিকটতম প্রিয়ের সাথে ছিল। যখন মানব সভ্যতা বৃদ্ধি পেতে থাকলো এবং যখন মানব ঐতিহ্য বেড়ে গেল তখন দ্বন্দ্ব একটি গোত্রের সঙ্গে অন্য গোত্রের শুরু হলো।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে দেশ ও জাতির মধ্যে অনেক যুদ্ধ হয়ে ছিল। ক্ষমতাসীনদের হাতে পরাজিতরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আর্ত চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী করে ফেলেছিল।কেউ তাদের কান্না শুনতে পাইনি । মানুষ তখনও জংলী ছিল, সভ্যতা অধিকাংশ লোকের মধ্যে আসেনি, সমাজের নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছিল এবং জাতির লোকেরা বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল।তুমি কি জানো এই যুদ্ধের উৎস কি ছিল? "ঈর্ষান্বিত" হওয়া। সহিংসতা পশুদের আচরণের একটি অংশ । সময়ের বিবর্তনে পশুদের প্রকৃতি মানব সহিংসতায় রূপ নেয়া শুরু করলো,কোন এক সময় প্রথম যুদ্ধের সূচনার সুত্রপাত শুরু হলো।এই যুদ্ধে বিশ্বের অনেক ক্ষতি হয়েছে । অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছে। অনেক শিশু হারিয়েছে তার প্রিয় বাবা। অনেক স্ত্রী হারিয়েছে স্বামী। অনেক মা তার ছোট শিশুদের হারিয়েছে। তাদের আর্তনাদে আকাশ ভারী হয়ে গিয়ে ছিল , কিন্তু ক্ষমতাসীনদের কোন দয়া হয়নি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ অবদী পৃথিবীর মানুষ ও অন্যান্য জীব এবং পরিবেশের যে পরিমান ক্ষতি সাধন হয়েছে পৃথিবীর শুরু হতে তা হয়নি।

হে বিশ্বের বিবেকবানরা একটু চিন্তা করো,যারা মৃত্যু বরন করেছে এবং যারা আহত হয়েছে তাদের আপনজনদের স্বজন হারানো আর্তনাদ কি কোন দিন অনুধাবন করেছো?যারা মরেছে তারা কেউই যুদ্ধ চাইনি,যুদ্ধ তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল।কত সুন্দর পরিবেশে তারা বসবাস করছিল।পরাশক্তিধর দেশ সমুহের হিংস্রতাই মানব সভ্যতার উপর চেঁপে বসে ছিলো এই যুদ্ধ।তাদেরকে অনেক বলা হয়েছিল যে দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করোনা,
আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করেছি।কিন্ত তাদের মনের ভিতর ছিল হিংসা।তারা নিজেদের যশ খ্যাতির জন্য মানুষের উপর যুদ্ধ চাঁপিয়ে দিয়েছিল।যারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চাঁপিয়ে দিয়েছিল তাদেরকে সবাই এখন অভিসম্পাত করে।যুদ্ধ কখনো পৃথিবীতে শান্তি আনতে পারেনা।প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের ক্ষত না শুকাতেই আবার শুরু হলো দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মহড়া।
লক্ষ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সামাজিক অবকাঠামো ভেঙ্গে গেছে, পৃথিবীর পরিবেশ নষ্ট হয়েছে কিন্তু এখনও যুদ্ধরত যুদ্ধাপরাধীদের যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। বাস্তবিকই, সুবিধাবাদীরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নামে আরেকটি ধ্বংসযজ্ঞ পৃথিবী বাসীর উপর চাপিয়ে দিয়েছিল । এই যুদ্ধ মানব সভ্যতার জন্য একটি অনন্তকালীন অভিশপ্ত ছিল, যার ভয়াবহতা বিশ্বের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত হতে পারে। হিরসিমা নাগাসিকা এবং তার আশেপাশের এলাকা, যেখানে অক্ষম শিশু এখনও জন্মগ্রহণ করে, তার বাস্তবতা কি। তারা কি অপরাধ করেছে?
কেন পৃথিবীর পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেল?
যুদ্ধবাজরা কি মানুষের আর্তনাদ শোনেনা? পৃথিবীর এত ক্ষতির পরও কি তারা যুদ্ধ বন্ধ করবেনা? কি লাভ হয়েছে যুদ্ধ করে? পৃথবী বাসীর জন্য কোন সফলতা নিয়ে এসছে এই যুদ্ধ? এই যুদ্ধ ছিল মানবতার বিরদ্ধে শৈরাচারদের যুদ্ধ,এই যুদ্ধ ছিল পৃথিবীর পরিবেশের ভারসাম্যের বিরুদ্ধে।মৃত্যু মানুষগুলি যদি জীবিত থাকতো তবে তারা পৃথিবীর পরিবেশের উন্নয়নের জন্য হইত অনেক কাজ করতো।যে মানুষগুলো মারা গেছে তাদের গলিত লাশ পৃথবীর পরিবেশকে নষ্ট করে ছিল,যারা পঙ্গু হয়েছিল তারা পৃথবীর জন্য একটা বোঝা হয়ে গিয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব এখনো শেষ হয়নি,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব এখন পরিবেশের উপরে পড়েছে।যুদ্ধ বাজরা প্রতিযোগীতা শুরু করেছে পারমানবিক শক্তি নিয়ে, পারমানবিক শক্তি পৃথিবীতে যে হারে বাড়ছে তা পৃথিবী বাসীর জন্য কোন শুভ বার্তা বয়ে আনবেনা।যে ব্যক্তি বা যারা এটা তৈরী করে পারমানবিক শক্তির মহড়া দিতে চাচ্ছে সেও এর প্রভাব হতে নিরাপদ না।সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি পৃথিবীর পরিবেশের ভারসাম্যের পরিবর্তন এসছে,অনাবৃষ্টি,অতিবৃষ্টি,খরা,যখন বৃষ্টি হবার সময় তখন বৃষ্টি হচ্ছেনা,যখন শীতের প্রয়োজন তখন শীত নেই,এই সমস্ত অনাকাংখিত পরিবর্তন আমাদেরকে কি বার্তা দিচ্ছে তা কি আমরা অনুভব করছি? হে যুবক এ সমস্ত দেখে আর যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা শুনে মন ভেঙ্গনা।মনে রাখবা অশান্তির অন্তরালে লুকিয়ে আছে মহাশান্তি যদি তুমি তা অর্জন করতে পারো।অশান্ত এই পৃধিবীতে মানবতার প্রশান্তির জন্য তুমি যদি কিছু করতে পারো তবে মনে রেখো এর চাইতে শান্তি তোমার জন্য আর কিছু হতে পারেনা।মানবতার পক্ষে কলম ধরো কথা বলো মনভেঙ্গে একঘরে হয়ে থেকোনা যুদ্ধবাজদের বিপক্ষে অবস্থান নাও।
পরাশক্তিধর দেশগুলো সহ পৃথিবীর সকল দেশ যুদ্ধের নামে মানুষ হত্যার জন্য যে সমস্ত অস্ত্র, সরঞ্জাম,গোলাবারুদ তৈরী করেছে,তা যদি মানবতার কল্যানে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যয় করা হতো তবে এই পৃথিবীকে দশবার নিরাপদ পরিবেশ দান করা যেত,এটা মানুষকে বুঝাও। এই অর্থ দিয়ে পৃথিবীবাসী যদি কোন কাজ নাও করতো তাও শত বছর বসে খেতে পারতো।
এখন চলছে অঘোষিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ,কি পাশ্চাত্য,কি প্রাচ্য,কি মধ্যপ্রাচ্য,কি প্রতিচী,সর্বোত্র যুদ্ধের দামামা,সর্বোত্র খালী গোলার আওয়াজ,বিমান হামলার বোমার আওয়াজ,ক্ষেপনাস্ত্রের আওয়াজ,ধ্বংস,মৃত্য,হত্যা,গুম,এ যেন মানবতার আর পরিবেশের জন্য বেদনাদায়ক নৈরাশ্যের সময়।
যুদ্ধের কবলে মানুষ আজ অসহায়, থাকার জায়গা নেই,ঘরে খাবার নেই,মান ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। চতুর দিকে হাহাকার কান্না,বেদনার সুর,মানুষ পরনির্ভরশীল জীবন যাপন করছে।হতাশ হয়োনা যুবক মেঘের আড়ালে সূর্য্য আছে আলো তোমাকে দিবেই যদি তোমার সে আত্মবিশ্বাস থাকে। তোমার করনীয় কি তুমি ঠিক করো।যদি তুমি নিজ বাঁচতে চাও তবে পারবেনা আর যদি সকলকে বাঁচাতে নিজেকে নিবেদিত প্রান হতে পারো তবে তাতে হইত তুমিও বেঁচে যাবে।নিরাশ হয়োনা মন ভেঙ্গোনা সামনে এগিয়ে চলো সহপাটির অভাব হবেনা।এক শ্রেনীর মানুষ হইত বলবে,
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষনা হয়নি,তাহলে এগুলো কোন যুদ্ধের চিত্র? পৃথিবীর মানুষের জ্ঞান গরিমা বাড়ছে,পৃথিবীর উন্নয়ন হচ্ছে,অসভ্য হতে মানুষ সভ্যতার আলো দেখতে চাচ্ছে কি এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখার জন্য? এত ধ্বংসযজ্ঞের পরও কি বলবে পৃথিবীর পরিবেশ ঠিক আছে?তাতে তোমার কিছু আসে যায়না,হাজার মানুষ হাজার রকম যুক্তি দিবে তোমাকে তোমার পথেই চলতে হবে।তাদের কথার অনেক যুক্তি আছে, ঐ যে দেখোনা
সামরিক জান্তারা বিভিন্ন মহড়া আর ক্ষেপনাস্ত্র পরিক্ষার নামে নিয়মিত যে বোমা ফাটাচ্ছে তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।একদিনের প্রশিক্ষন আর পরিক্ষার নামে পৃথিবীতে যে পরিমান গোলাবারুদ আর বোমা বিষ্ফোরন করা হয় তাতে প্রায় পনের দিন সময় লাগে ঐ এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক হতে।মানুষ হত্যার জন্য কেন এত প্রশিক্ষণ? হ্যাঁ একটি দেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য অবশ্যই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন,তার অর্থ এটা না যে যখন মন চাইল প্রশিক্ষনের নামে গোলাবারুদের বিষ্ফোরন ঘটিয়ে পরিবেশকে দুষন করলাম।উল্লেখিত ঘটনা সমুহেরআমরা যদি দ্রুত একটা প্রতিকার ব্যবস্থা না নেই,তাহলে পৃথিবীর পরিবেশ অচিরেই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে,আর এই দায়িত্বটাই তোমার স্কন্ধে,এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ধৈর্য্যচ্যুত হয়োনা মন ভেঙ্গোনা সফলতা তোমার আসবেই।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Mst. Fahima Akter অনুপ্রেরণার রসেসিক্ত, পড়ে খুবই ভালো লাগলো
Tafhimul Islam অসাধারণ গল্প, অনেক অনেক শুভকামনা রইল
Hasan ibn Nazrul যুবকদের প্রতি আপনার এ আহ্বান চির উন্নত। সব যুবকের উচিৎ এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সুন্দরতম সমাজ গড়ার পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নেওয়া। শুভ কামনা আপনার জন্য।
Ahad Adnan মনের গভীরে নাড়া দিয়ে গেল আপনার এই লেখা। অনেক ভালো লিখেছেন ভাই।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

অশান্ত পৃথিবীর অবস্থা দেখে যেন একজন তরুন মন খারাপ না করে,তাঁকে সাহস দিয়ে সামনে এগিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যয় এই গল্পে র সামঞ্জস্য।

২৯ জুন - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪